হানিবালের-রোম-আক্রমণ

রোমক গণপ্রজাতন্ত্র (৫০৯-২৭ খ্রি.পূ.)

খ্রিস্টপূর্ব ৫০৯ সালে রোমকরা রাজতন্ত্র থেকে গণপ্রজাতন্ত্রের যুগে পদার্পণ করে। রোমক গণপ্রজাতন্ত্র S.P.Q.R নামে পরিচিত ছিল। S.P.Q.R বলতে Senātus Populusque Rōmānus বোঝায়। এর অর্থ ‘রোমক সিনেট ও জনগণ’।

রোমক গণপ্রজাতন্ত্রের সংবিধান অনুসারে রোমের শাসন ব্যবস্থায় তিনটি বিভাগ ছিল- বিধানসভা (assembly), সিনেট ও ম্যাজিস্ট্রেট।

নির্বাহী প্রশাসনের সর্বোচ্চে ছিল দুই কনসাল (consul)। বিধানসভার ভোটে এই দুই কনসাল এক বছরের জন্য নির্বাচিত হতো।

রোমক বিধানসভা তিনটি ভাগে বিভক্ত ছিল- উচ্চশ্রেণির ব্যক্তিবর্গের কিউরিয়েট বিধানসভা (comitia curiata), সৈন্যদের সেঞ্চুরিয়েট বিধানসভা (comitia centuriata) ও গোত্রভিত্তিক ট্রাইবাল (comitia tributa) বিধানসভা। এই তিন ধরনের পাশাপাশি গোত্রভিত্তিক ট্রাইবাল বিধানসভার অন্তর্গত আরেকটি অঙ্গ ছিল- প্লেবিয়ান কাউন্সিল (Plebeian council/concilium plebis) বা গণপরিষদ। বিধানসভার প্রধানদের বলা হতো ম্যাজিস্ট্রেট।  

রোমের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ৩০ জন ব্যক্তিকে (কুরিয়া নামে পরিচিত) নিয়ে কিউরিয়েট বিধানসভা গঠিত হত। এটা অনেকটা আমাদের কেবিনেটের মতো। নির্বাহী বিভাগের কনসাল নির্বাচনসহ রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে এ বিধানসভা বসতো।

রোমক সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে গঠিত হতো সেঞ্চুরিয়েট বিধানসভা। এর অন্যতম প্রধান কাজ ছিল ভোটের মাধ্যমে রোমের নির্বাহী বিভাগের কনসাল নির্বাচন ও উর্ধ্বতন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ।

রোমের বিভিন্ন এলাকা ও ঐ এলাকায় বসবাসরত গোত্রসমূহের ভিত্তিতে নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে গঠিত হতো ট্রাইবাল বিধানসভা। এখানে প্রতি গোত্রের একটি করে ভোট ছিল। এ বিধানসভা অধঃস্তন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করতো।

রোমক সমাজের সাধারণ জনগণ ‘প্লেবিয়ান’ (plebeians) নামে পরিচিত ছিল। এই প্লেবিয়ানদের নিয়ে গঠিত গণপরিষদ গঠনগতভাবে অনেকটা ট্রাইবাল বিধানসভার মতো। তবে এ কাউন্সিলের আইন প্রণয়নের ক্ষমতা ছিল এবং প্রত্যেক সদস্যের একটি করে ভোট ছিল। এ সভার প্রধানকে বলা হতো ‘প্লেবিয়ান ট্রিবিউন’ (plebeian tribune)।  

৪৯৫ খ্রি.পূর্বে রোমের শাসন ব্যবস্থার বিভিন্ন বিভাগসমূহের স্বেচ্ছাচারিতা নিরোধের জন্য ‘গণ আদালত’ (Courts of the Plebeians) তৈরি করা হয়। সরকারের যে কোন সিদ্ধান্ত রদ  করার জন্য এ আদালতের ভেটো (veto) ক্ষমতা ছিলো।

গণপরিষদ প্রণীত আইনসমূহের সংকলন ‘প্লেবিসিটা’ (plebiscita)। ২৮৭ খ্রি.পূর্বাব্দে ‘হরটেনসিয়ান আইন’ (Hortensian law/lex Hortensia) বলে প্লেবিসিটাকে রোমের সকল জনগণের জন্য অবশ্য পালনীয় করা হয়। এটাই রোমকদের প্রথম লিখিত আইন সংকলন। তবে প্রথম রোমক আইনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপিত হয়েছিল অনেক আগে। ৪৫০ খ্রি.পূর্বাব্দে। সেটির নাম ছিল ’১২ টেবিলের আইন’ (Twelve Tables)।

রোম শাসন ব্যবস্থায় সবচেয়ে শক্তিশালী বিভাগের নাম সিনেট। সিনেটের সদস্যদেরকে বলা হতো ‘প্যাট্রিশিয়ান’ (patrician)। এটা ছিল উপদেষ্টা পরিষদ। এটি কনসালদেরকে মূলত পররাষ্ট্র ও সামরিক বিষয়ক বিষয়াবলীতে উপদেশ প্রদান করতো। সিনেটের সরাসরি আইন প্রণয়নের ক্ষমতা না থাকলেও বিধানসভার যে কোন আইন প্রণয়নে সিনেটের ব্যাপক প্রভাব লক্ষণীয় ছিল।

রোমক রাজতন্ত্রের সময়ে প্রতি রাজা তার নিজের সিনেট সদস্য নির্বাচন করতো। রাজতন্ত্র থেকে গণপ্রজাতন্ত্রে উত্তরণের সময়ে পুর্বের সিনেটর সদস্যরা থেকে যায়। এর পর থেকে সিনেট সদস্য পদ কম-বেশি অনেকটা বংশ পরম্পরায় ধাবিত হতে থাকে। তবে এ পদ ধরে রাখার জন্য তাদেরকে আর্থিক, সামরিক ও চারিত্রিক সততা বজায় রাখতে হতো।

সিনেটের পরামর্শসমূহ ‘সিনাতাস কনসুলতা’ (senatus consulta) নামে পরিচিত ছিল। ম্যাজিস্ট্রেটগণ এ পরামর্শ পালনে বাধ্য ছিল। সাধারণত, দুই জন কনসালের একজন পদাধিকার বলে সিনেটের প্রেসিডেন্ট হতো।  

রোমক বিচার ব্যবস্থা ছিল ম্যাজিস্ট্রেটদের হাতে। বিধানসভার ভোটে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ হতো। এরা প্রধানত দুই ভাগে বিভক্ত ছিল- সাধারণ ও বিশেষ (extraordinary)।

সাধারণ ম্যাজিস্ট্রেটগণ দুই ভাগে বিভক্ত ছিল- উর্ধ্বতন ম্যাজিস্ট্রেট ও অধঃস্তন ম্যাজিস্ট্রেট। উর্ধ্বতন ম্যাজিস্ট্রেটগণ সেনচুরিয়েট বিধানসভা কর্তৃক নির্বাচিত হতো। এদের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত ছিল দুই কনসাল, প্রাতর (praetor) ও সেনসর (censor)। প্রাতরগণ বিধানসভার আহবান ও বিচার কাজ পরিচালনা করতো। অন্যদিকে সেনসররা জনসংখ্যা গণনার দায়িত্ব পালন করতো। প্রাতরেরা অনেক সময় বিভিন্ন প্রদেশের গভর্নর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতো।   

ট্রাইবাল বিধানসভা অধঃস্তন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করতো। এদের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত ছিল ট্রিবিউন (tribune), এদিলেস (aediles) ও কোয়েস্তর (quaestor)।

বিশেষ ম্যাজিস্ট্রেটগণের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন ‘ডিকটেটর’ (dictator) ও ‘ম্যাজিস্টার ইকুইতুম’ (magister equitum)। যে ম্যাজিস্ট্রেট কোন জরুরী অবস্থায় দায়িত্ব পালন করতো তাকে ‘ডিকটেটর’ (dictator) বলে। জরুরী অবস্থার প্রেক্ষিতে বিশেষ কোন দায়িত্ব পালনে কনসাল ডিকটেটর নিয়োগ করতো। সাধারণত মাস ছয়েক পরে ডিকটেটরকে সাধারণ ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হতো। এর আগে ডিকটেটর তার দায়িত্বে একজন ম্যাজিস্টার ইকুইতুম নিয়োগ করতো। ম্যাজিস্টার ইকুইতুম অর্থ ‘ঘোড়ার প্রভু’। এরা জরুরী অবস্থার কোন যুদ্ধে ক্যাভালরির (cavalry) নেতৃত্বে থাকতো।

কনসাল, প্রাতর, ডিকটেটরের মতো ম্যাজিস্ট্রেদের সামরিক বা বিচার বিভাগীয় আদেশ প্রদানের ক্ষমতা ছিল। এর ক্ষমতাকে ইম্পেরিয়াম (imperium) বলা হতো।

রোমক গণপ্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় ধর্ম ছিল রোমান বহুইশ্বরবাদ। মূলত গ্রিকদের দেবী-দেবীরা নাম পরিবর্তন করে রোমক ধর্মে নিজেদের অবস্থান করে নেয়। (পড়ুন- গ্রিক পুরাণের সহজপাঠ (১ম, ২য়৩য় ভাগ) গণপ্রজাতন্ত্রে ধর্ম ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব ছিল ‘কলেজ অভ পনটিফস’ (College of Pontiffs) এর হাতে। সব উচ্চপদস্থ ধর্ম যাজকেরা এর সদস্য ছিল। এদের প্রধানকে বলা হতো ‘পনটিফেক্স ম্যাক্সিমাস’ (Pontifex Maximus)।  

রোম লুণ্ঠন

রোমের ইতিহাসে ছয়টি বড় লুণ্ঠনের ইতিহাস জড়িয়ে আছে। এ সব লুণ্ঠনগুলোর প্রথমটি ঘটেছিল খ্রি.পূ. ৩৯০ সালে। বাকী সব গুলো খ্রিস্টাব্দে- ৪১০, ৪৫৫, ৪৭৬, ১০৮৪ ও ১৫২৭ সালে।

রোম শাসনামলে মধ্য ও পশ্চিম ইউরোপ (অট্রিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন, নরওয়ে, ডেনমার্ক, সুইডেন ও দক্ষিণ ব্রিটেন) অঞ্চলের যাযাবর আদিবাসীরা কেল্ট নামে পরিচিত। কেল্টদের নিজস্ব ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি গড়ে উঠেছিল।

কেল্টদের রোম আক্রমণের নেতৃত্বে ছিল যুদ্ধবাজ নেতা- ব্রেনুস। রোমকরা এ আক্রমণ প্রতিহত করার চেষ্টা করলে রোমক ও কেল্টের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। এ যুদ্ধের নাম ‘আলিয়ার যুদ্ধ’।

আলিয়ার যুদ্ধে রোমকরা শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়। খ্রি.পূ. ৩৮৭ সালের ১৮ জুলাই এই গ্যালিক (ফ্রান্স) কেল্টরা রোম তছনছ করে দেয়। এ সময় তারা প্রায় সব রোমক সিনেটদেরকে হত্যা করে, রোমে আগুন লাগায়, নারীদেরকে ধর্ষণ করে ও সম্পত্তি লুট করে। অবশেষে ১০০০ পাউন্ড সোনা মুক্তিপণ পেয়ে ব্রেনুস ৭ মাস অবরোধ শেষে রোম ছেড়ে চলে যায়।

রোমকদের রাজ্য বিস্তার

রোমকদের রাজ্য বিস্তারের সময়ে যে কয়টি যুদ্ধ উল্লেখযোগ্য সেগুলো হলো স্যামনাইট যুদ্ধ (৩৪৩-২৯০ খ্রি.পূ.), পিরিক যুদ্ধ (২৮০-২৭৫ খ্রি.পূ.) ও পিউনিক যুদ্ধ (২৬৪-১৪৬ খ্রি.পূ.)।

 আলিয়ার যুদ্ধের পর রোমকরা সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে শুরু করে, তৈরি করে নিজস্ব যুদ্ধ কৌশল। ধীরে ধীরে রোমক সৈন্যবাহিনী (Roman legion) স্থল পথে অপ্রতিরোধ্য শক্তি হয়ে ওঠে। অবশ্য জলপথে রোমকদের শক্তি সঞ্চয়ে একটু বিলম্ব হয়। পিউনিক যুদ্ধ শেষে রোমকরা নৌপথেও শক্তিশালী হয়ে ওঠে।

সাধারণভাবে রোমক সৈন্যবাহিনীর চারটি স্তর ছিল। প্রথম স্তরে ছিল ৮ সৈন্যের ‘তাবু দল’। এদেরকে বলা হতো কনতুবারনিয়াম। ১০-টি কনতুবারনিয়াম নিয়ে তৈরি হতো একটি ‘শতক’ (৮০ সৈন্য), যাকে বলা হতো ‘সেঞ্চুরিয়া’। তাই এর প্রধান ‘সেঞ্চুরিয়ন’ নামে পরিচিত ছিল। ৬-টি সেঞ্চুরিয়াকে একত্রে বলা হতো ‘কোহর্ট’ (৪৮০ সৈন্য+৬ সেঞ্চুরিয়ন) বা ব্যাটালিয়ন। কোহর্টের কোন নির্দিষ্ট প্রধান ছিল না। ৬ জন সেঞ্চুরিয়নের মধ্যে যে সিনিয়র সে কোহর্ট পরিচালনা করতো। তাকে ‘প্রাইমাস পিলাস’ বা ‘প্রথম ঢাল’ বলা হতো। ১০-টি কোহর্ট মিলে হতো একটি ‘লেজিও’ (৪৮০০ সৈন্য+৬০ জন্য সেঞ্চুরিয়ন) বা সৈন্যদল। তবে ১ম কোহর্টে সৈন্য বেশি থাকতো বলে একটি লেজিওর মোট সংখ্যা ছিল ৫৪০০ জন (ভিন্ন ভিন্ন যুদ্ধে ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যা)। যে সিনিয়র সেঞ্চুরিয়ন লেজিও পরিচালনা করতো তাকে ‘লেজিয়ন লিগেইট’ বলা হতো। এর উপরে ছিল জেনারেল। একজন জেনারেলের দায়িত্বে অনেকগুলো লেজিও থাকতো।

লেজিও গঠনের পাশাপাশি রোমকরা যুদ্ধে আরেকটি বিশেষ কৌশল অবলম্বন করতো। তারা একটি চতুর্ভূজের আকৃতির মতো করে সৈন্যদের সমাবেশ করে প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করতো। এ রণকৌশলের নাম ‘ফ্যালাক্স’ বা ‘ম্যানিপল’।

রোমকরা আশেপাশের অঞ্চলগুলোতে বিশেষ করে দক্ষিণে রাজ্য বিস্তার করতে থাকে। রোমের দক্ষিণে বসবাসকারী স্যামনাইটরা রোমকদেরই জ্ঞাতি ভাই। বিভিন্ন সময়ে তারা বিশেষ করে কেল্টিকদের আক্রমণের সময় তারা রোমকদের সাথে যুদ্ধ করলে পরে তারা রোমকদের সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে। এদের সাথে যুদ্ধ করতে করতে রোমক সৈন্যরা যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শী হয়ে ওঠে।  

পিরাস নামে গ্রিসের এপিরাস (Epirus) অঞ্চলের এক রাজা রোমকদের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বছর ছয়েক যুদ্ধ করেছিল। রাজার নামে এ যুদ্ধকে পিরিকের যুদ্ধ বলা হয়। এ যুদ্ধে রোমকদের হাত হতে এপিরাস বাঁচাতে পারলেও পিরাস এত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় যে জয় ও পরাজয়ের মধ্যে তেমন কোন ব্যবধান ছিল না। উপরের ঘটনা থেকে “পিরিক ভিক্ট্রি” (pyrrhic victory) শব্দটির জন্ম। এটি এমনই জয় যা পরাজয়ের শামিল।

পিউনিক যুদ্ধ

ভূমধ্যসাগরের উত্তরে যখন রোমক রাজ্য বাড়ছিল, তখন সাগরের উত্তর পশ্চিমের হিসপানিয়া (স্পেন) থেকে শুরু করে দক্ষিণ পাশের উত্তর আফ্রিকা অঞ্চল হয়ে সাগরের দক্ষিণ পূর্ব অঞ্চল পর্যন্ত আরেকটি শক্তিশালী সভ্যতা বেড়ে উঠতে থাকে। বর্তমান তিউনিসিয়ার কার্থেজ নামের একটি অঞ্চলকে কেন্দ্র করে বেড়ে ওঠা এ সভ্যতার নাম কার্থেজিয় সভ্যতা। খ্রি.পূ. নবম শতকে কার্থেজের উত্থান হয়।

কার্থেজিয়রা ফিনিশিয়দের বংশধর। এরা ফিনিশিয় বা পিউনিক ভাষায় কথা বলতো। সে সময়ে রোমক রাজ্য বিস্তারের পথে একমাত্র শক্তিশালী বাধা ছিল ফিনিশিয়রা। তাই খ্রিস্টপূর্ব ২৬৪ থেকে ১৪৬ পর্যন্ত তারা তিনবার ফিনিশিয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে রোমকরা তাদেরকে সর্বশান্ত করে দেয়। এই তিন যুদ্ধ পিউনিক যুদ্ধ নামে খ্যাত হয়ে আছে।   

কার্থেজ ছিল বাণিজ্যিক সাম্রাজ্য। তাই তারা খুব বেশি সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করেনি। তাদের সৈন্যদের অধিকাংশই ছিল ভাড়াটে সৈন্য। এদেরকে অর্থের বিনিময়ে ভাড়া করে এনে যুদ্ধ করাতে হতো। তবে একটি বিষয় না বললেই নয়, নৌ-পথে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে করতে ফিনিশিয়দের নৌশক্তি অপরাজেয় হয়ে ওঠে।

পিউনিক যুদ্ধের (১ম: ২৬৪-২৪১ খ্রি.পূ.) শুরু হয়েছিল সিসিলি দ্বীপের আধিপত্য নিয়ে। রোমক গণপ্রজাতন্ত্রের দক্ষিণে ভূ-মধ্যসাগরে তিনটি বড় দ্বীপ-কর্সিকা, সার্দিনিয়া ও সিসিলি। সে সময়ে এ তিনটির দ্বীপের দুটি ও সিসিলির অধিকাংশ কার্থেজিয়দের দখলে ছিল। এ যুদ্ধে রোমকরা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। তবে তারা এ যুদ্ধে জয়লাভ করে।

এ যুদ্ধের রোমকরা নৌযুদ্ধের রণকৌশল রপ্ত করে। তারা কার্থেজিয়দের কাছ থেকে নৌযান তৈরি করতে শেখে। পাশাপাশি তারা এক নৌযান থেকে আরেক নৌযানে যাবার জন্য এক ধরনের পাটাতন তৈরি করে। একে ‘করভাস’ বলে। এটা দিয়ে রোমকরা শত্রু জাহাজে প্রবেশ করে নৌযুদ্ধকে স্থলযুদ্ধে রূপান্তর করে যুদ্ধে জয়লাভ করতো। ফলশ্রুতিতে পরবর্তীতে রোমকরা কার্থেজিয়দের কর্সিকা ও সার্দিনিয়া দ্বীপ দুইটিও দখল করে নেয়।

প্রতিশোধের নেশায় মত্ত হয়ে ওঠে কার্থেজিয়রা। শুরু হয় দ্বিতীয় পিউনিক ‍যুদ্ধের (২১৮-২০১ খ্রি.পূ.) প্রস্তুতি। এটি বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত যুদ্ধ। দ্বিতীয় পিউনিক যুদ্ধে কার্থেজিয়দের নেতৃত্ব দিয়েছিল কার্থেজিয় এর জেনারেল হামিলকার বারকার পুত্র মহাবীর হানিবল। তার ভাই হাসদ্রুবালও বড় যোদ্ধা ছিলেন।

হানিবাল ইতিহাসের অন্যতম সেরা সমরনায়কদের একজন। আলপস পর্বতমালা সসৈন্যে অতিক্রম করার দুর্লভ সুযোগ যারা পেয়েছিলেন তাদের একজন হানিবল। দ্বিতীয়জন নোপোলিয়ন বোনাপার্ট। হানিবল বিশাল এক হাতিবহর নিয়ে আলপস পর্বত অতিক্রম করে ইতালির পো নদীর অববাহিকায় উপস্থিত হয়েছিলেন। রোমকদের তিনি বহুবার বিধ্বস্ত করেছেন। তার বিখ্যাত লড়াইগুলো হলো ত্রেবিয়া (Trebbia), ত্রাসিমেন (Trasimene), ক্যানি (Cannae) ও যামার (Zama) লড়াই।  

তবে হানিবাল রোমকে অধিকার করতে পারেননি। যখন সে রোমের বিভিন্ন অঞ্চলে আক্রমণ করছিল তখন রোমকরা কার্থেজে আক্রমণ করে। ফলে হানিবাল কার্থেজ বাঁচাতে ফিরে এসে যামার লড়াইয়ে অংশ নেয়। এ যুদ্ধে কার্থেজিয়দের শোচনীয় পরাজয় হয়। রোমকদের পক্ষে এ জয়ের মহানায় ছিল রোমক আতিহাসের অন্যতম এক জেনারেল-স্কিপিও আফ্রিকানুস। হানিবাল সম্ভবত আত্মহত্যা করে জীবনাসান ঘটান।

হানিবালের-রোম-আক্রমণ
হানিবালের-রোম-আক্রমণ

আবারও কার্থেজ সংগঠিত হতে থাকে। তবে রোমকরা এবার তাদের আর সেই সুযোগ দেয়নি। রোমক সিনেটর কাতোর সেই বিখ্যাত উক্তি “Carthage must be destroyed” সত্যি হয়েছিল। তৃতীয় পিউনিক যুদ্ধে (১৪৯-১৪৬ খ্রি.পূ.) রোমকরা কার্থেজের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেয়। তারা কার্থেজ ধ্বংস করে দেয়। বলা হয় যে, রোমকরা কার্থেজের জমিতে এমন ভাবে লবণ ছড়িয়ে দিয়েছিল যে সেখানে কোন ফসল পর্যন্ত ফলতো না।

Civis Romanus Sum -“আমি একজন রোমক নাগরিক” 

রোমকরা শুধু রাজ্য দখল করেনি। সাথে সাথে সাম্রাজ্য গড়ে তোলার ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছে। গণপ্রজাতন্ত্র রোম থেকে রোম সাম্রাজ্য গড়ে ওঠার পেছনে রোমকদের একটি সিদ্ধান্তের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেটা হলো রোমকদের অধিকৃত অঞ্চলের সবাইকে নাগরিকত্ব প্রদান। এমনকি রোমক দাসদেরও নাগরিকত্ব গ্রহণের সুযোগ ছিল।

তবে নাগরিকত্ব প্রদানের বিষয়টি বহুকাল ধরে রোমের বিধানসভা ও সিনেটে আলোচিত-সমালোচিত হয়েছে। বেশ কয়েকজন প্রাণও দিয়েছেন। রোমক নাগরিকত্ব পেলে লোকজন নাগরিক সুবিধা ভোগে, উন্নত জীবনের আশায় দলে দলে রোমে আসতে শুরু করবে। মানুষের এই বাড়তি চাপ রোমের অর্থনীতিকে দূর্বল করবে। এই যুক্তিতে অনেকে অধিকৃত অঞ্চলের লোকজনকে নাগরিকত্ব প্রদানের বিরোধিতা করেছিল। এ সত্ত্বেও আস্তে-ধীরে বিভিন্ন অঞ্চলের লোকজন বিভিন্ন উপায়ে রোমক নাগরিকত্ব পেতে থাকে।

তবে রোমক নাগরিকত্ব আইন পাস হয় অনেক পরে। এটি পাস করেছিলেন এক রোম সম্রাট- মার্কাস অরেলিয়াস। আইনটির নাম ছিল ‘কনস্টিটিটিও এন্টোনিনিয়ানা’ (Constitutio Antoniniana)। ২১২ সালে এটি পাস হয়।

গৃহযুদ্ধ

রোমক ইতিহাসে ছোট-বড় অসংখ্য গৃহযু্দ্ধ হয়েছে। এর মধ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী রোমের শেষ একশো বছরে গৃহযুদ্ধ রোমকে গণপ্রজাতন্ত্র থেকে সাম্রাজ্যে রূপান্তরিত করেছিল।  

গুহযুদ্ধের মূলে ছিল অর্থনৈতিক বৈষম্য। অধিকৃত অঞ্চল বৃদ্ধির কারণে রাষ্ট্রীয় লোকজনের সুযোগ-সুবিধা ও বিত্ত-বৈভব বাড়তে থাকে। অন্যদিকে, নাগরিকত্ব লাভের লোভে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোকজন রোমে আসতে থাকে। সংকুচিত হতে থাকে রোমের সাধারণ জনগণের সুবিধা ও অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা। ফলে সমাজের ধনী ও গরীবের মাঝে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক বৈষম্য সাধারণ জনগণকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার দাবীতে সোচ্চার করতে থাকে। ফলে রোমে দুটি মূল ধারার ক্রমে ক্রমে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এদের একটি সিনেট ও অন্যান্য ধনীক শ্রেণির ‘অপটিমেইটস’। আর অন্যটি সাধারণ জনগণের ‘পপুলারিস’।

এই দ্বন্দ্বকে গতিশীল করেছিল টিবেরাস ও গাইয়াস নামের দুই ভাই। ইতিহাসে এরা ‘গ্রাচি ব্রাদারর্স’ নামে খ্যাত। এরা দুই জনই ‘প্লেবিয়ান ট্রিবিউন’ ছিল। এদের মূল দাবী ছিল জনগণের সম্পদের ও ভূমির ন্যায্য বণ্টন। এরাই সমাজতন্ত্র ও লোকরঞ্জনবাদের (populism) সবচে প্রাচীন প্রবক্তা বলে ধরা হয়। রাষ্ট্রবিরোধী তকমা দিয়ে টিবেরাসকে হত্যা করা হয়; আর গাইয়াস নিরুপায় হয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, যে জনগণের জন্য এ দুই জনের জীবনাবসান হয়েছিলো, সেই জনগণ তাদের বিপদের দিনে তাদের পাশে দাঁড়াইনি।

তবে অপটিমেইটিস ও পপুলারিস- এই দুই শিবিরের দ্বন্দ্ব টিকে ছিল। খ্রি.পূ. প্রথম শতকের শুরুতে যখন দুই বিখ্যাত জেনারেলের ক্ষমতার অন্তর্দ্বন্দ্ব এই দুই শিবিরের দ্বন্দ্বের সাথে যুক্ত হয়, তখনি এই দ্বন্দ্ব আরো জোরালো হয়ে ওঠে।  অপটিমেইটসের দলে জেনারেল সালা আর পপুলারিসের দলে জেনারেল গাইয়াস মারিয়াস যুক্ত হয়। সামরিক চাকুরি শেষে জমি পাবে এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে মারিয়াস লোকজনকে সৈন্যবাহিনীতে যুক্ত করতে থাকে। এভাবে জেনারেল মারিয়াস হয়ে ওঠে জনগণের প্রতিভূ। মারিয়াস ও সালার মৃত্যুর পরে রোমে আরো দুই বিখ্যাত জেনারেলের উত্থান ঘটে- পম্পেই দ্য গ্রেটজুলিয়াস সিজার। গাইয়াস মারিয়াসের ভাইপো বা ভাগ্নে এই সিজার।

গণপ্রজাতন্ত্রী রোমের পতন

পম্পেই ও সিজারের সাথে রোমে আরও এক জেনারেল ছিল- ক্রাসাস। তাকে সে সময়ে রোমের সবচে’ ধনী বলা হতো। এই তিন জনে মিলে ৬০ খ্রি.পূর্বাব্দে রোমক শাসন ব্যবস্থায় এক পরিবর্তন আনে। এরা তিন জনে মিলে দুই কনসালের পরিবর্তে তিন কনসাল পদ্ধতি প্রচলন করেন। এ শাসন ব্যবস্থার নাম ‘ট্রায়ামভিরেইট’ (Triumvirate) বা ‘ত্রয়ী শাসনব্যবস্থা’। এই পদ্ধতিতে তিন জেনারেলই সমান ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন।  

রোমের পূর্ব-দক্ষিণাঞ্চলে পম্পেই ও পশ্চিম-উত্তরাঞ্চলে রাজ্য বিস্তারে সিজারের অবদান ছিল। পম্পেই সিজারের মেয়ে জুলিয়াকে বিয়ে করেছিল। তবে বিয়ের পাঁচ বছরের মাথায় (৫৪ খ্রি.পূ.) জুলিয়া মারা যায়। পরের বছর মারা যায় ট্রায়ামভিরেইটের এক জেনারেল ক্রাসাস। এর পরে শুরু হয় দুই জেনারেলের ক্ষমতায় টিকে থাকার পায়তারা। সিনেটররাও দিনে দিনে সিজার ও পম্পেই শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়ে।

৪৯ খ্রি.পূর্বাব্দে গল (ফ্রান্স) এর গভর্নরের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে সিজার সৈন্যবাহিনী নিয়ে রোমের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। রোমের নিয়মে কোন প্রত্যেক জেনারেলকে তার সেনাদল ভেঙে দিয়ে রোমে প্রবেশ করতে হতো। সেনাদল নিয়ে রোমে প্রবেশ করা ছিল রোমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। সিজার সেনাদল না ভেঙে সসৈন্যে রোমের রুবিকন নদী অতিক্রম করে নিজেকে রোমের ডিকটেটর ঘোষণা করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইংরেজিতে একটি বাগধারা চালু হয়- (to) cross the Rubicon। এর অর্থ ’এমন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা যা থেকে পিছুহটা যাবে না’। যাই হোক, পম্পেই সিজারের এ আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুললেও লাভ হয়নি।

পরের বছর পম্পেই সিজারকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করেছিল। তাতেও লাভ হয়নি। অবশেষে পম্পেই মিশরের টলেমি রাজবংশের আশ্রয় চায়। রোমের আনুগত্য নিয়ে তখন যৌথভাবে মিশর শাসন করতো ১৩তম টলেমি ও তার বোন ৭ম ক্লিওপেট্রা। পম্পেইয়ের নৌকা মিশরের উপকূলে ভীড়লে সেখানে তারা তাকে হত্যা করে মাথাটা সিজারকে উপহার দিয়েছিল।  

[এখানে জেনে রাখা ভালো যে, ক্লিওপেট্রা কোনো নাম নয়। এটি টলেমি রাণীদের উপাধি। মিশরের রাণী হিসেবে আমরা যে ক্লিওপেট্রার নাম জানি সে আসলে ৭ম ক্লিওপেট্রা ফিলোপেতর।]

১০-১২ বছরের ভাইয়ের সাথে ক্লিওপেট্রার শাসনামলে রাজ অমাত্যরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। সিজার যখন মিশরে পৌঁছায়, তখন মিশরে গৃহযুদ্ধ চলছে। সিজার সেখানে ক্লিওপেট্রার শাসন পাকাপোক্ত করেন। সিজারের ঔরসে ক্লিপেট্রার গর্ভে যে জন্ম নেয়া শিশুর নাম সিজারিয়ান (টলেমি সিজার)। ৪৫ খ্রি.পূর্বে সিজার রোমক ক্যালেন্ডারের (মার্চ দিয়ে বছর শুরু) পরিবর্তে জুলিয়ান ক্যালেন্ডার (জানুয়ারি দিয়ে বছর শুরু) চালু করে।

তিন বছর মিশরে কাটানোর পরে রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতা একীভূত করে সম্রাটের উপাধি নিয়ে সিজার মিশর হতে রোমে যাত্রা করে। রোমে রটে যায়, সিজার রোমে আবার রাজতন্ত্র চালু করবে। ফলে সিনেটররা তাকে হত্যার প্রাসাদ ষড়যন্ত্র শুরু করে। পরের বছরের ১৫ মার্চ তারিখে কতিপয় সিনেটর সিজারকে প্রাসাদের অভ্যন্তরে হত্যা করে। ‘এলাম, দেখলাম, জয় করলাম‘ (Veni, vidi, vici/ I came, I saw, I conquered) জুলিয়াস সিজারের এক বিখ্যাত উক্তি।

সে সময়ে রোমে সিসেরো নামে এক আইনজীবী ও বাগ্মী পুরুষ ছিলো। সিজারের মৃত্যুর পরে সে একদিন বলেছিলো, “সৎ লোকেরা সিজারকে হত্যা করেছে…কারো পরিকল্পনা, কারো সাহস বা কারো সুযোগ ছিলো না; কিন্তু সবারই ইচ্ছা ছিলো” (All honest men killed Caesar…. some lacked design, some courage, some opportunity: none lacked the will”)। সিজারের ঘনিষ্ঠ বন্ধু মার্ক এন্থনি এই সিসেরোকে হত্যা করেছিলো।

সিজারের মৃত্যুর পরে রোমের শাসনকার্য পরিচালনার জন্য তার পালকপুত্র অগাস্টাস (বা গাইয়াস অক্টাভিয়াস) (রোমক রাজনীতিবিদ গাইয়াস অক্টাভিয়াসের পুত্র; পিতা ও পুত্রের একই নাম), জেনারেল মার্ক এন্থনি ও জেনারেল লেপিদাস মিলে ২য় ট্রায়ামভিরেইট গঠন করেন। ৪০ খ্রি.পূর্বাব্দে ‘ব্রানদিসিয়াম চুক্তি’র মাধ্যমে এই তিনজনের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলের শাসনের দায়িত্ব বন্টন করা হয়।

তবুও তিন জনের মধ্যে সম্পর্ক কখনো ভালো হয়নি। লেপিদাস সিসিলিতে অগাস্টাসের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। তার ট্রায়ামভিরেইটের পদ চলে যায়। এন্থনি তার শেষ স্ত্রী মিশরের রাণী ক্লিওপেট্রার সাথে মিলে অগাস্টাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। ‘এন্থনির গৃহ যুদ্ধ’ নামের এ যুদ্ধই রোম গণপ্রজাতন্ত্রের শেষ যুদ্ধ। এ যুদ্ধের ‘এক্টিয়াম লড়াই’য়ে শোচনীয় পরাজয়ের পরে এন্থনি ও ক্লিওপেট্রা আত্মহত্যা করে। ক্লিওপেট্রার মৃত্যুতে মিশরে টলেমি রাজবংশের অবসান ঘটে। 

এন্থনির মৃত্যুর পরে সমগ্র রোমে অগাস্টাসের একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। ২৭ খ্রি.পূর্বাব্দে অগাস্টাস সিজার রোম গণপ্রজাতন্ত্র বিলুপ্ত করে রোম সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে। এ সম্রাটের সম্মানে ইংরেজি মাসের নাম আগস্ট রাখা হয়েছে।

(ধারাবাহিকভাবে পৃথিবীর গল্প চলবে)

পৃথিবীর গল্প পরম্পরা