কারোলি তাকাকসঃ স্বপ্নের হাতে অঙ্গীকারের ট্রিগার

কারোলি তাকাকসঃ এক হাত নিয়ে দুইবার অলিম্পিকে স্বর্ণ জয়

কারোলি তাকাকসঃ স্বপ্নের হাতে অঙ্গীকারের ট্রিগার
কারোলি তাকাকসঃ স্বপ্নের হাতে অঙ্গীকারের ট্রিগার

কারোলি তাকাকস (১৯১০-১৯৭৬) ছিল হাঙ্গেরিয় সেনাবাহিনীর সবচেয়ে দক্ষ ডানহাতি স‍্যুটার। সে সময়ে হাঙ্গেরির জাতীয় পর্যায়ের সবগুলো স‍্যুটিং প্রতিযোগিতায় সে ছিল অপরাজিত চ‍্যাম্পিয়ন। তাকাকসের অলিম্পিকে সোনা জয়ের স্বপ্ন ছিল।

১৯৩৬ সালে সার্জেন্ট তাকাকস বিশ্বমানের একজন পিস্তল-স‍্যুটার। তবে কমিশনড অফিসার না হওয়ার কারণে হাঙ্গেরি তাঁকে ৩৬ সালের অলিম্পিকে অংশ নিতে দেয়নি। পরে সে আইন বাতিল হলে তাকাকস ১৯৪০ সালে অলিম্পিক জয়ের স্বপ্ন দেখে।

১৯৩৮ সালে সেনাবহিনীর এক প্রশিক্ষণকালে গ্রেনেড বিস্ফোরণে তাঁর ডান হাতটি উড়ে গেল। হাত উড়ে গেলেও স্বপ্ন কখনো উড়ে যায়নি। যা হাত চলে গেছে তা নিয়ে সে বসে থাকেনি, যে হাত রয়ে গেছে মাস খানেক বাদে সে বাম হাতে আবার প্রশিক্ষণ শুরু । অলিম্পিকের সোনা তাঁকে জিততেই হবে।

স্বপ্ন এক ভয়ানক নেশা, মাদকের চেয়ে বড় কোনো নেশা। মাদকের নেশাও হয়তো কেটে যায়, কিন্তু স্বপ্নের নেশা স্বপ্ন পূরণের আগে কাটে না।

১৯৩৯ সালে জাতীয় প্রতিযোগিতায় সেই বাম হাতে সবাইকে চমকে দিয়ে তাকাকস ন‍্যাশনাল চ‍্যাম্পিয়নস ট্রফি ঘরে তুলে নেয়। এবার তাঁর চোখ অলিম্পিক ১৯৪০। 

বিধি বাম। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে ৪০ সালের অলিম্পিক হলো না। তবে তাকোকস থামেনি। স্বপ্ন, আহারে স্বপ্ন! এবার তাঁর লক্ষ‍্য ১৯৪৪ সালের অলিম্পিক। আরো চার বছর ধরে সে নিজেকে তৈরি করতে থাকলো।

না, এবারও হলো না। ৪৪ সালে অলিম্পিক বাতিল হলো। এখন তাঁর বয়স ৩৪ বছর। সামনে তবুও ১৯৪৮ সালের সোনার ঝলকানি। আরো চারটি বছর।

১৯৪৮ সালে তাকাকসের বয়স ৩৮ বছর। এ বয়সে দেশের পক্ষে অলিম্পিকের অংশগ্রহণের জন‍্য তাঁকে তরুণ সব তুখোড়দের সাথে লড়তে হয়েছিল। দু’হাতে বন্দুক ধরে সে সব তরুণরা লড়েছিল তবুও তারা পারেনি কারণ তাকাকসের বাম হাতের বন্দুক আঁকড়ে ধরে ছিল উড়ে যাওয়া ডান‍ হাতের স্বপ্ন।

তাকাকস ৪৮ ও ৫২ সালে পরপর দুইবার স‍্যুটিংয়ে সোনা জিতেছিল। স্বপ্নের হাতে অঙ্গীকারের ট্রিগার- লক্ষ‍্যভেদ নিশ্চিত।

সম্পর্কিত অন্যান্য ব্লগ