ব্ল্যাক ফ্রাইডে

যুক্তরাষ্ট্রে নভেম্বরের চতুর্থ বৃহস্পতিবার ‘থ্যাঙ্কসগিভিং ডে’ হিসেবে পালিত হয়। ‘থ্যাঙ্কসগিভিং ডে’ এক ধরণের নবান্ন উৎসব- ভালো ফসলের জন্য বিধাতাকে ধন্যবাদজ্ঞাপন। এর পরের দিনই ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’ হিসেবে পরিচিত।

নামের সাথে ‘ব্ল্যাক’ থাকলেও দিনটি কোনো শোকের আবহ বহন করে না। (যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার মতো দু’একটি রাজ্য ব্যতীত) এটি ছুটির দিন নয়; মহাধুমধামে আর ছাড়ে কেনাকাটার দিন। বড়দিনকে সামনে রেখে লোকজনকে বাজার-সদাইয়ে উদ্বুদ্ধ করতে এই দিনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ব্যাপক ছাড়ের বিকিকিনির আয়োজন করে থাকে।

১৯৭৫ সালের পর থেকে পাশ্চাত্য সমাজে এ দিনটি অধিক পরিচিতি পেতে শুরু করে। এই ফ্রাইডেকে ‘ব্ল্যাক’ সাব্যস্ত করার পেছনে দুটি বিশেষ ব্যাখ্যা প্রচলিত আছে।

(এক) ব্যাপক ছাড় ও কেনাকাটার হুড়োহুড়িতে রাস্তা-ঘাটে ট্রাফিকের নাজেহাল অবস্থা হয়, ফলে পুরো ট্রাফিক ব্যবস্থা একরকম অচলাবস্থায়  পৌঁছায় বা ‘ব্ল্যাক-আউট’ হয়ে যায় বলে এই ফ্রাইডেকে ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’ বলে।

(দুই) অর্থনৈতিক হিসেব-নিকেশ সম্পর্কিত ব্যাখ্যা হলো, যে সকল বিক্রেতাগণের বিক্রি-বাট্টা নামতে নামতে হিসেবের খাতায় লালদাগে নেমে যায় তাদের আজকের বিকিকিনির পরে তা পুনরায় কালো কালির আঁচড়ে ফিরে আসে বলে এই শুক্রবারকে ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’ বলে অভিহিত করা হয়। এ হিসেবে ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’ হলো আমাদের ‘হালখাতা’ দিবসের মতো।

ইতিহাসে আরও চারটি ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’র অস্তিত্ত্ব পাওয়া যায়- ১৩ মে, ১৯৬০ সালে সানফ্রান্সিকোর বিক্ষোভ;   ৮ জুন, ১৬৮৮ সালে কিং জেমস দ্বিতীয় কর্তৃক সাতজন ‘অ্যাংলিকান বিশপ’ গ্রেপ্তার; ১৮ অক্টোবর, ১৮৮১ সালে হারিকেনের আঘাতে স্কটল্যাডের আইমাইথে প্রায় ২০০ জনের মৃত্যু; এবং ২২ নভেম্বর, ১৯৬৩ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন. এফ. কেনেডিকে গুপ্তহত্যা।

এ সব দূর্ঘটনা শুক্রবারে ঘটেছিল বলে এ দিনগুলোকেও ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’ বলে। তবে হালখাতাসদৃশ এই ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’র সাথে অন্য ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’গুলোর তাৎপর্য, ভাবগত বা ইতিহাসভিত্তিক কোনই মিলবন্ধন নেই।

প্রথম প্রকাশকাল– ২৬ নভেম্বর ২০১৫

এপ্রিল ফুল, তথ্যের ভুল?

সম্পর্কিত অন্যান্য ব্লগ